সত্তর-আশির দশকে মুম্বইয়ে সিনেমার টিকিট ব্ল্যাক করা দিয়ে যার হাতেখড়ি, ইন্টারপোলের খাতায় সে ‘মোস্ট ওয়ান্টেড’ হয়ে ছিল টানা দু’দশক!
উচ্চাকাঙ্খী রাজেন্দ্র সদাশিব নিকালজি আসলে মুম্বইয়ের সিনেমা হলগুলিতে শুধুই ‘টিকিট ব্ল্যাকার’ হিসেবে থাকতে চায়নি।
মুম্বইয়ে জন্ম যখন, ‘হিরো’ই হতে চেয়েছিল! আজীবন ‘টিকিট ব্ল্যাকার’ হয়ে না থেকে আরও বড় হতে চেয়েছিল ছোটা রাজন!
খুব সহজে তাড়াতাড়ি ‘বড়’ হয়ে ওঠার একটাই জগৎ থাকে- আন্ডার ওয়ার্ল্ড। ধুরন্ধর রাজেন্দ্র সদাশিব সেই ‘ওয়ার্ল্ডে’ই পা রেখেছিল।
সেই ‘ওয়ার্ল্ডে’ হুট করে ‘বড়’ হয়ে উঠতে গেলে যা যা লাগে, সেই খুন, ধর্ষণ, অপহরণ, তোলাবাজি, পাচার- ছোটা রাজনের ‘বায়োডেটা’য় তার সব কিছুই ছিল! তাই মুম্বইয়ের ‘আন্ডার ওয়ার্ল্ডে’ তুড়ি মেরেই ‘বড়’ হয়ে উঠতে পেরেছিল ছোটা রাজন।
সেই সময়েই মুম্বইয়ের ‘আন্ডার ওয়ার্ল্ডে’র আরও এক ‘ডন’ দাউদ ইব্রাহিমের সঙ্গে রাজনের দোস্তির শুরু। একই সঙ্গে দু’জনের চালানো অনেক ‘অপারেশানে’র গল্প এখনও মুখে মুখে ফেরে মুম্বইয়ের পুরনো পুলিশ অফিসারদের।
এর পর যা স্বাভাবিক, তা-ই হল। দুই ‘ডনে’ ঠোকাঠুকি লাগল। সঙ্ঘাত এমন পর্যায়ে পৌঁছল যে, বছর পনেরো আগে ব্যাঙ্ককের একটি হোটেলে ছোটা রাজনকে খুনের চেষ্টা করেছিল দাউদের লোকজন। প্রাণে বাঁচতে হোটেলের ছাদ থেকে ঝাঁপ মেরেছিল রাজন। তাতে বেকায়দায় পড়ে গিয়ে তার শিরদাঁড়ায় বড়সড় চিড় ধরেছিল। তাকে হাসপাতালে ভর্তি করানো হয়েছিল। কিন্তু, সেখান থেকেও পালিয়ে যায় রাজন। তার পর থেকেই ‘ভ্যানিশ’ হয়ে গিয়েছিল ছোটা রাজন। তবে ২০০১-এই দাউদ ইব্রাহিমের এক নম্বর সাগরেদ শরদ শেট্টিকে খুন করে রাজনের লোকজন। পুলিশ বলে, ব্যাঙ্ককের হোটেলে রাজনের ওপর হামলারই বদলা ওই ঘটনা।
প্রায় ১৫ বছর কোথায় ‘ভ্যানিশ’ হয়ে ছিল ছোটা রাজন?
সিডনি পুলিশ জানিয়েছে, টানা পনেরো বছর অস্ট্রেলিয়াতেই গা ঢাকা দিয়ে ছিল রাজন। বালিতে রবিবার ধরা পড়ল যখন, তখনও তার ছদ্ম-পরিচয় ছিল- ‘মোহন কুমার’।
No comments:
Post a Comment