প্যাট্রিসিয়া। মেক্সিকোবাসীর কাছে আতঙ্কের জন্য এখন এই একটা নামই যথেষ্ট।
গত কাল সন্ধেতেই পশ্চিম মেক্সিকোয় আছড়ে পড়েছিল হারিকেন ঝড়— প্যাট্রিসিয়া। ঘণ্টায় দু’শো কিলোমিটার বেগে ঝোড়ো হাওয়ার সঙ্গে প্রবল বৃষ্টি। তবে শনিবার সকালের দিক থেকেই শক্তি হারাতে শুরু করেছে প্যাট্রিসিয়া। যতই তা স্থলভূমির দিকে এগোচ্ছে, ততই দুর্বল হচ্ছে। তবে তার আগেই সে প্রচুর ক্ষয়ক্ষতি করে দিয়েছে বলে জানানো হয়েছে প্রশাসনের তরফে। বিধ্বংসী ঝড়ে হতাহতের কোনও খবর পাওয়া যায়নি। আবহবিদরা জানাচ্ছেন, প্যাট্রিসিয়াই আমেরিকার সবচেয়ে শক্তিশালী ঝড়।
প্রথম দিকে প্যাট্রিসিয়ার গতিবিধি আবহাওয়া বিজ্ঞানীদের কপালে চিন্তার ভাঁজ ফেলেছিল। মাঝ সমুদ্রে থাকাকালীন হাওয়ার গতিবেগ ছিল ঘণ্টায় প্রায় ৩২৫ কিলোমিটার। তবে স্থলভূমিতে ঢোকার পর থেকে ধীরে ধীরে শক্তি হারিয়েছে সে। গত কাল সন্ধেয় যখন প্যাট্রিসিয়া স্থলভূমিতে আছড়ে পড়ে, তখন তার গতিবেগ ছিল ঘণ্টায় দুশো কিলোমিটার। আর আজ সকালের দিকে এর গতি অনেকটাই কমে গিয়েছে। প্যাট্রিসিয়ার এই অদ্ভুত আচরণে বিস্মিত আবহবিদরা।
কেন প্যাট্রিসিয়ার এমন অদ্ভুত আচার-আচরণ?
এর জন্য এল নিনোকেই দায়ী করছেন আবহবিদরা। তাঁদের দাবি, এল নিনোর জেরে সমুদ্রপৃষ্ঠের তাপমাত্রা বাড়ছে। এর ফলেই প্যাট্রিসিয়ার গতিবিধির এমন পরিবর্তন। অনেকেই আবার এর জন্য বিশ্ব উষ্ণায়নকেই দায়ী করছেন।
ঝড়ের পূর্বাভাসের পর পরই মেক্সিকোর প্রশান্ত মহাসাগরীয় উপকূলবর্তী এলাকা থেকে মানুষজনকে সরিয়ে নিয়ে যাওয়া শুরু হয়েছিল। বন্ধ করে দেওয়া হয়েছিল বন্দর, হোটেল, স্কুলও। বিধ্বংসী হারিকেন শক্তি হারিয়ে আশার আলো দেখালেও ঝড়ের জেরে অন্য আশঙ্কার মেঘ দেখছেন আবহাওয়া বিজ্ঞানীরা। ঝড়ের সঙ্গে প্রবল বৃষ্টিপাতের ফলে উপকূলের অধিকাংশ এলাকা এখন জলের তলায়। উপড়ে গিয়েছে বিদ্যুতের খুঁটিও। কিছু কিছু জায়গায় আবার প্রবল বৃষ্টির জেরে হড়পা বান এবং ধসের আশঙ্কাও আছে বলে মনে করা হচ্ছে।
সবচেয়ে বেশি ক্ষয়ক্ষতি দেখেছে পুয়ের্তো ভাল্লার্তা শহরটি। এর পাশাপাশি, উপকূলের কাছাকাছি বেশ কিছু শহরেও প্রচুর ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে। বহু মানুষ বাড়ি-ঘর হারিয়েছেন।
সদ্য প্যাট্রিসিয়ার ঝাপটা খাওয়া বন্দর শহর মানজানিলোর একটি ভিডিও প্রকাশ করা হয়েছিল। তাতে দেখা যাচ্ছে, ঝড়ের কোপে নুইয়ে পড়েছে গাছগুলি। এই শহরেরই এক বাসিন্দা জানিয়েছেন,হারিকেনের রোষে সাজানো সুন্দর শহরটি তছনছ হয়ে গিয়েছে। তবে শহরের বাসিন্দারা সকলেই বিপন্মুক্ত।
No comments:
Post a Comment