মোবাইল কানে দিয়ে পথ হাঁটলে বিপদের সম্ভাবনা যে কতটা, সে কথা আর কে না জানে! বিপদ আছে, মোবাইল ফোনের পর্দায় চোখ রেখে পথ হাঁটাতেও! তবে, তার বাইরেও আছে অন্য এক ঝামেলা! মোবাইলে মগ্ন পথচারী আপনাকে খেয়াল করবেন না! তার জেরে ব্যস্তসমস্ত পথে যদি ধাক্কা খেতে হয়? এই সব সমস্যার কথা ভেবেই তাইল্যান্ডে তৈরি হল শুধুমাত্র মোবাইল ব্যবহার করতে করতে হেঁটে যাওয়ার জন্য এক বিশেষ সরণি। ব্যাঙ্ককের ক্যাসেসার্ট ইউনিভার্সিটি সংলগ্ন এলাকায় বৃহস্পতিবার আমজনতার জন্য খুলে দেওয়া হল এই মোবাইল ফোন লেন।
মোবাইল-মত্ত মানুষদের কথা ভেবে তৈরি এই সরণির পরিকল্পনাও বেশ সুষ্ঠু! ৫০০ মিটার চওড়া এক ফুটপাথ, তার এক দিক বরাদ্দ শুধুমাত্র মোবাইল ব্যবহার করতে করতে পথ চলার জন্য। তাঁদের সংসর্গ বাঁচিয়ে অন্য লেন দিয়ে নিশ্চিন্তে যাতায়াত করতে পারবেন সাধারণ পথচারীরা। সমস্যা বলতে কেবল একটাই— আপাতত এই মোবাইল ফোন লেন ১৫ নভেম্বর পর্যন্ত পরীক্ষা-নিরীক্ষার অধীনে থাকবে। যদি দেখা যায়, কোনও রকম দুর্ঘটনা ঘটছে না এবং সাধারণ পথচারীদের উপকার হচ্ছে, তবেই এই সরণি পাকাপাকি ভাবে খুলে দেওয়া হবে ব্যবহারের জন্য।
অবশ্য, এ রকম বিশেষ মোবাইল সরণি বিশ্বে নতুন কিছু নয়। এর আগে চিনের চংকিং শহরে এমন এক মোবাইল ফোন লেন খোলার কথা ঘোষণা করা হয়েছিল। তারও আগে ওয়াশিংটন ডিসিতে তৈরি হয়েছিল এ রকম মোবাইল ফোন সরণি। তাইল্যান্ডের তবে এত দেরি হল কেন?
আসলে অনেক দিন ধরেই তাইল্যান্ডের ক্যাসেসার্ট ইউনিভার্সিটির পড়ুয়ারা এক সমস্যার সম্মুখীন হচ্ছিল। সকাল বেলায় অফিস যাওয়ার ভিড়ে যখন ওই রাস্তা ভর্তি থাকে, তখন পড়ুয়ারা তাড়াতাড়ি ওই ভিড় কাটিয়ে ক্লাসে যেতে পারে না। মোবাইল ফোন ব্যবহারীকারীদের পাশ কাটানো, তাদের সঙ্গে ধাক্কা লেগে যাওয়া, তার থেকে দু’-এক প্রস্ত কথা কাটাকাটি— এ সব লেগেই থাকত ওখানে। ফলে, তাদের নেমে আসতে হয় রাস্তায়। যানবাহনের মাঝখান দিয়ে হাঁটতে গিয়ে দুর্ঘটনাও ঘটে! এ সব সমস্যার সমাধানের জন্যই মাথা খাটিয়ে এই বিশেষ মোবাইল ফোন লেন তৈরি করা হয়েছে। পাশাপাশি রাখা হয়েছে চার রকম সতর্কীকরণ চিহ্ন এবং তিনটি ম্যাসকট যা ট্র্যাফিকের ভিড়ে পড়ুয়া এবং মোবাইল ব্যবহারকারীদের দরকার মতো চোখ-কান খোলা রাখতে সাহায্য করবে।
No comments:
Post a Comment