বড়সড় ফাটল ধরেছে আফগানিস্তানের তালিবানদের মধ্যে। মোল্লা ওমরের পর কে নেতা হবেন, তা নিয়েই এখন তালিবান-শিবিরে  তুমুল বিরোধ। খুব শীঘ্রই দু’টুকরো হয়ে যেতে পারে তালিবানরা। কারণ, দ্বিপাক্ষিক আলোচনায় দু’পক্ষই কোনও সমঝোতায় পৌঁছতে পারেনি। বৈঠক পুরোপুরি ভেস্তে গিয়েছে। তালিবানদের একটি গোষ্ঠীর মুখপাত্র এই খবর জানিয়েছেন।
মাসকয়েক আগে আফগান সরকারের সঙ্গে তালিবানদের শান্তি-আলোচনা শুরু হয়েছিল। সরকারি সূত্রের দাবি, তালিবানদের মধ্যে এই ফাটল সেই আলোচনাকে থামিয়ে দেবে। আর তালিবানদের যে গোষ্ঠীটি বেশি জঙ্গিপনায় বিশ্বাসী, তার সঙ্গে হাত মিলিয়ে ইরাক ও সিরিয়ার সন্ত্রাসবাদী সংগঠন ‘ইসলামিক স্টেট’ বা ‘আইসিস’-এর জঙ্গিরা আফগানিস্তানে ঘাঁটি গাড়বে।
গত মাসে আফগান সরকারের গোয়েন্দা বিভাগ খবর দেয়, তালিবানদের প্রতিষ্ঠাতা মোল্লা ওমর বছরদুয়েক আগে মারা গিয়েছেন। ওই খবর পাওয়ার পরেই ওমরের ‘ডেপুটি’ মোল্লা মনসুর তড়িঘড়ি গোপনে একটি বৈঠক ডাকেন। সেখানে তাঁকে তালিবানদের ‘নেতা’ বলে ঘোষণা করা হয়। এর পরেই তালিবানদের মধ্যে শুরু হয়ে যায় তুমুল গণ্ডগোল। সূত্রের খবর, মনসুরের সঙ্গেই হাত মিলিয়েছে ওমরের ছেলে ইয়াকুব ও ভাই মানান। যদিও গোড়ার দিকে, ওমরের পরিবারের সদস্যরা কেউই মনসুরকে মেনে নিতে চাননি। পরে অবশ্য মনসুরের সঙ্গে তাঁদের ‘রফা’ হয়ে যায়।
তালিবানদের মনসুর-বিরোধী গোষ্ঠীর মুখপাত্র মোল্লা আবদুল মানান নিয়াজি এ দিন বলেছেন, ‘আমাদের দুই গোষ্ঠীর আলোচনা পুরোপুরি ভেস্তে গিয়েছে। আমরা চেয়েছিলাম, তালিবানদের ‘সুপ্রিম কাউন্সিল’ সকলের সম্মতি নিয়েই পরবর্তী নেতা বেছে নিক। কিন্তু, মনসুর তাঁর জায়গা থেকে একচুলও নড়লেন না। এর পর আর আমাদের রফায় পৌঁছনোর কোনও সম্ভাবনা রইল না।’
সরকারি সূত্রের দাবি, মনসুর-বিরোধী গোষ্ঠীটি মদত পাচ্ছে আরব আমিরশাহি থেকে।
ফাটল কতটা বড়, তা আরও স্পষ্ট করে দিয়েছেন নিয়াজি। বলেছেন, “এর পর আমরা প্রকাশ্যেই ওদের বিরোধিতা করব। ওদের আমরা ‘জিহাদি’ বলেই মনে করি না।”
নব্বইয়ের দশকের মাঝামাঝি থেকে বছর দশেক তালিবানি শাসন জারি ছিল আফগানিস্তানে। সম্প্রতি কাবুল থেকে মার্কিন সেনা-প্রত্যাহারের পর আফগানিস্তানে ফের মাথাচাড়া দিয়েছে তালিবানরা।