Monday, November 23, 2015

ক্রেতা টানতে আবাসন সংস্থার বাজি আকাশপথ

শুধু ছাড় বা উপহারে চিঁড়ে ভিজছে না। ঝিমিয়ে পড়া আবাসনের বাজারকে চাঙ্গা করতে তাই এখন প্রযুক্তি ও নকশার যুগলবন্দিকেও হাতিয়ার করছে নির্মাণ শিল্পমহল। সম্প্রতি ই এম বাইপাসের ধারে এক আবাসন প্রকল্পের ‘ইউএসপি’ ছিল শহরের সবচেয়ে উঁচু বিনোদনের জায়গা। সুইমিং পুল থেকে স্পা— সবই হাজির যেখানে। আর এ বার রাজারহাটে নিজেদের নতুন আবাসনে বিশ্বের সব থেকে দীর্ঘ ‘স্কাই ওয়াক’ (আকাশপথ) তৈরির দাবি করছে স্থানীয় নির্মাণ সংস্থা সিদ্ধা গোষ্ঠী।
সিদ্ধা গ্যালাক্সিয়া আবাসন প্রকল্প তৈরি হচ্ছে প্রায় ১৫ একর জুড়ে। প্রথম পর্যায়ের কাজ শেষ। এ বার দ্বিতীয় পর্যায়ে স্কাই ওয়াক তৈরির পরিকল্পনা। পনেরো তলা উচ্চতার আটটি বহুতল। তাদের ছাদ একে অপরের সঙ্গে জুড়ে এটি তৈরি হবে। জগিং ট্র্যাক যার অন্যতম আকর্ষণ। সংস্থার প্রধান সঞ্জয় জৈনের দাবি, ১,১০০ মিটারের ওই স্কাই ওয়াক (বা জগিং ট্র্যাক) বিশ্বে দীর্ঘতম।
গার্গী রায়চৌধুরীর সঙ্গে সংস্থার কর্তারা। 
১৪০ ফুট উচ্চতায় তৈরি এই স্কাই ওয়াক হবে সবুজ ঘেরা। হাঁটা বা দৌড়নোর লম্বা জায়গা ছাড়াও থাকবে জলাশয়, ফোয়ারা ও টেলিস্কোপ দিয়ে আকাশ দেখার সুযোগ। সিদ্ধা গোষ্ঠীর দাবি, ‘স্টার ওয়াক’ নামে ওই বিশেষ পরিকাঠামো তৈরির সমস্ত সরকারি ছাড়পত্র এসে গিয়েছে। প্রাথমিক কাজও শুরু হয়েছে। প্রকল্প শেষের সম্ভাব্য সময়সীমা চার বছর। যদিও সঞ্জয় জৈনের দাবি, তার আগেই (২০১৮ সালে) ফ্ল্যাটের চাবি তুলে দেওয়া হবে ক্রেতাদের হাতে। ফ্ল্যাটের সংখ্যা ২,৫০০।
২০ কোটি টাকায় এই নকশা তৈরি করেছেন স্থপতি জে পি অগ্রবাল। স্কাই ওয়াকের মাধ্যমে আবাসনের ৮টি টাওয়ার পরস্পরের সঙ্গে জুড়ে থাকবে। সংস্থার দাবি, এ জন্য বাড়তি খরচের বোঝা ক্রেতার উপর চাপবে না। বাজার দর মেনেই দাম রাখা হয়েছে প্রতি বর্গ ফুটে ৪ হাজার টাকা। ৪০ লক্ষ টাকা থেকে শুরু এই ফ্ল্যাট মধ্যবিত্তের সাধ্যের মধ্যে বলেই সংস্থার দাবি।
এ রাজ্যে বাড়ি বা ফ্ল্যাটের বাজার এখন তলানিতে। উপদেষ্টা সংস্থা নাইট ফ্র্যাঙ্কের পরিসংখ্যান অনুযায়ী, দেশের প্রথম ৮টি শহরের মধ্যে কলকাতার হালই সবচেয়ে খারাপ। চলতি বছরের জানুয়ারি-জুনে সবচেয়ে কম ফ্ল্যাট বিক্রি হয়েছে এখানেই। মাত্র ৫,৮৮৩টি। সেখানে বেঙ্গালুরুতে বছরের প্রথম ছ’মাসে ২২,২৩৪টি ফ্ল্যাট বিক্রি হয়েছে। মুম্বই ও দিল্লিতে যথাক্রমে ২৮, ৪৪৬ ও ১৪,২৫০টি।
সিদ্ধা গোষ্ঠীর দাবি, বিলাসবহুল ফ্ল্যাটের সুবিধা দিয়েও তাদের দাম মধ্যবিত্তের নাগালে। ফলে বাজার যেমনই হোক, ক্রেতা পেতে সমস্যা হবে না।

No comments:

Post a Comment