‘ঠাণ্ডা যুদ্ধ’ ফের শুরু হয়ে গেল বলে!
আবার জোর হাওয়া লাগল ‘ঠাণ্ডা যুদ্ধে’র পালে!
উত্তর সিরিয়ার আকাশে কাল তুর্কি সেনারা একটি রুশ যুদ্ধবিমান গুলি করে নামিয়ে দেওয়ার পর আজ প্রকাশ্যেই তুরস্কের পাশে দাঁড়াল আমেরিকার নেতৃত্বাধীন ন্যাটো জোট। গত অর্ধ শতাব্দীতে এই প্রথম কোনও রুশ যুদ্ধবিমানকে গুলি করে নামাল ন্যাটো জোটের কোনও দেশ।
খুব স্পষ্ট করেই ন্যাটোর সেক্রেটারি জেনারেল জেন্স স্টোলেনবার্গ এ দিন জানিয়ে দিয়েছেন, ‘‘জোটের সবক’টি দেশই তুরস্কের পাশে রয়েছে। তবে উত্তেজনা যত তাড়াতাড়ি কমানো যায়, ততই ভাল।’’
সিরিয়া ও তুরস্কের সীমান্তে লাতাকিয়া প্রদেশে কাল রুশ যুদ্ধবিমান গুলি করে মাটিতে নামানোর পর তুরস্কের সেনাবাহিনীর তরফে জানানো হয়েছিল, রুশ যুদ্ধবিমানটি তাদের আকাশসীমা লঙ্ঘন করেছিল। তবে সেটিকে গুলি করে নামানোর আগে ওই বিমানের দুই পাইলটকে বেশ কয়েক বার সতর্ক করে দেওয়া হয়েছিল।
এর কিছু ক্ষণের মধ্যেই তুরস্কের দাবি উড়িয়ে দেয় রুশ প্রতিরক্ষা মন্ত্রক। কোনও রাখঢাক না রেখেই তুরস্ককে হুঁশিয়ারি দেন রুশ প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন। বলেন, ‘‘এর পরিণতি ভয়াবহ হবে। আসলে জঙ্গিদের সাহায্য করতেই আমাদের পিছন থেকে ছুরি মেরেছে তুরস্ক।’’
রাশিয়ার ‘রক্তচক্ষু’ দেখে তড়িঘড়ি ন্যাটো-কে জরুরি বৈঠক ডাকতে বলে সদস্য দেশ তুরস্ক। ন্যাটো-র অপর সদস্য দেশ আফ্রিকার অ্যাঙ্গোলাও তুরস্কের পক্ষ নেয়।
সিরিয়াকে কেন্দ্র করে বেশ কিছু দিন ধরেই দু’ভাগে ভাগ হয়ে গিয়েছে গোটা বিশ্ব। গত সেপ্টেম্বরে সিরিয়ার আকাশে প্রথম রুশ যুদ্ধবিমান ঢুকে পড়ার পরেই আমেরিকা অভিযোগের আঙুল তুলে বলেছিল, সিরিয়ার প্রেসিডেন্ট বাশার আল-আসাদের সরকারকে মদত দিচ্ছে রাশিয়া। মস্কো সেই অভিযোগ উড়িয়ে দিয়ে বলেছিল, আইএস জঙ্গিদের নিকেশ করতেই সিরিয়ার আকাশে ঢুকেছে রুশ যুদ্ধবিমান। ঘটনা হল, সিরিয়ার আসাদ সরকারকে একেবারেই পছন্দ নয় তুরস্কের।
প্যারিস হামলার পর পরিস্থিতি অল্প সময়ের জন্য হলেও, কিছুটা বদলেছিল। আইএস জঙ্গিদের নিকেশ করতে সিরিয়া ও সিরিয়ার বাইরে অন্য দেশেও রাশিয়া ও ফ্রান্সের কাছে আরও বেশি সামরিক সক্রিয়তার দাবি জানিয়েছিল ওয়াশিংটন। মার্কিন প্রেসিডেন্ট বারাক ওবামার সঙ্গে বৈঠকে ফরাসি প্রেসিডেন্ট ফ্রাসোঁয়া অল্যাঁ আইএস জঙ্গিদের বিরুদ্ধে এক জোট হয়ে লড়ার জন্য রাশিয়ার হাতে হাত মেলানোর আর্জি জানিয়েছিলেন ওয়াশিংটনের কাছে।
কিন্তু, কাল তুরস্কের ঘটনা ফের পরিস্থিতিকে থমথমে করে দিল। গোটা বিশ্বকে আবার কার্যত, দু’পক্ষে ভাগ করে দিল। যার এক দিকে আমেরিকা ও ‘ন্যাটো’ জোটের দেশগুলি। আর অন্য দিকে রাশিয়া।
আইএস জঙ্গি নয়, আদতে প্রেসিডেন্ট আসাদের বিরোধী মধ্যপন্থীদের শায়েস্তা করতেই সিরিয়ার আকাশে রুশ যুদ্ধবিমান ঢুকে পড়েছে বলে কাল আবারও মন্তব্য করেছেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট।
No comments:
Post a Comment