পেশাওয়ার শহরতলির বাদাবের বিমানঘাঁটিতে শুক্রবারের তালিবানি হামলার পরে মুখতোড় জবাবে তালিবানি ডেরায় হানা চালাল পাক বায়ুসেনা। সূত্রের খবর, শনিবারের সেনা হামলায় ১৬ জন জঙ্গি নিহত হয়েছে। গ্রেফতার করা হয়েছে পঞ্চাশেরও বেশি সন্দেহভাজনকে।
পাকি-আফগান সীমান্তের তিরা উপত্যকার জঙ্গি ঘাঁটিতে শনিবার হামলা চালায় পাক বায়ুসেনা। প্রশাসনিক সূত্রের খবর, ওই এলাকা দিয়েই দু’দেশের মধ্যে চোরাপথে লেনদেন চলে। সেনা সূত্রের খবর, পরিকল্পিত ভাবে কিছু দিন আগেই আফগানিস্তান থেকে ওই পথে পাকিস্তানে এসে কাছাকাছি গ্রামগুলিতে গা-ঢাকা দিয়ে থাকছিল জঙ্গিরা। গত কাল বাদাবের বিমানঘাঁটিতে ঢুকে দু’দলে ভেঙে গিয়ে জঙ্গিরা প্রথমেই মসজিদকে নিশানা করেছিল। শুক্রবারের প্রার্থনা চলার সময়েই নিরস্ত্র সেনাদের উপর গুলি চালায় জঙ্গিরা। ১৬ জন সেনার মৃত্যু হয়। গুলির শব্দে বাহিনীর অন্যান্য অফিসার মসজিদে পৌঁছে জঙ্গিদের পাল্টা আক্রমণ করে। দু’পক্ষের সংঘর্ষে ক্যাপ্টেন-সহ মৃত্যু হয় আরও সাত জনের। নিহত হয় ১৩ জঙ্গি।
বিমানবাহিনী জানায়, পেশাওয়ার থেকে ৬ কিলোমিটার দূরের ওই বিমানঘাঁটি মূলত সেনাদের থাকার জন্যই ব্যবহার করা হয়। ফলে ঘটনার সময় সেখানে সেনা ছাড়া ছিলেন অন্যরাও। জঙ্গির গুলিতে আহত দু’জন অফিসার ও আট জন সেনা-সহ মোট ২৯ জনকে হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়েছে।
পরে তেহরিক-ই-তালিবানের মুখপাত্র মহম্মদ খুরাসানি ই-মেল মারফত হামলার দায় স্বীকার করেন। বলেন, ‘‘ওই বিমানঘাঁটি থেকে নিয়মিত আক্রমণ চালানো হয়। আমাদের আত্মঘাতী জঙ্গির একটি দল হামলাটি চালিয়েছে।’’ তাঁর দাবি, মহিলা ও বাচ্চাদের নিরাপদ রেখেই জঙ্গিরা ৫০ জন সেনাকে হত্যা করেছে। যদিও সেই তথ্যের কোনও সত্যতা পাওয়া যায়নি।
ঘটনাস্থলে যান পাক সেনাপ্রধান জেনারেল রাহিল শরিফ। বাহিনীর প্রধান মুখপাত্র জেনারেল অসীম বাজওয়া জানান, সেনাঘাঁটির বাসিন্দাদের অন্যত্র সরিয়ে নিয়ে যাওয়া হয়েছে। কোনও জঙ্গি গা-ঢাকা দিয়ে আছে কি না, খোঁজ করা হচ্ছে। ইতিমধ্যেই তল্লাশি চালিয়ে ধৃত ১৫ জন। এ দিনই পঞ্জাব প্রদেশের কর্মা বিমানঘাঁটিতেও জঙ্গি হানার পরিকল্পনা করা হয়েছিল। তবে সময় থাকতে এক জঙ্গি গ্রেফতার হওয়ায় তা ঠেকানো গিয়েছে বলে জানিয়েছে পাক পুলিশ।