নিজের মতো করে দিয়েছেন কয়েকটা টোটকা। আর তাতেই নাকি নতুন মরসুমে নতুন করে ঝাঁপানোর মন্ত্র পেয়েছে কেরল ব্লাস্টার্স!
তিনি, সচিন তেন্ডুলকর নিজের টিমকে উদ্বুদ্ধ করতে যা বলেছেন, তাতে নতুনত্ব না থাকলেও মাঠে নেমে সাফল্য পাওয়ার একেবারে গোড়ার কথাগুলো ছিল। যা শোনার চব্বিশ ঘণ্টা পরেও আই লিগ চ্যাম্পিয়ন টিমের অধিনায়কের গলায় মুগ্ধতা। কেরল থেকে শিল্টন পাল টেলিফোনের বলছিলেন, ‘‘প্রায় চব্বিশ ঘণ্টা পেরিয়ে গিয়েছে, কিন্তু সচিনের কথাগুলো এখনও কানে বাজছে।’’ বাংলার কিপারের গলায় উত্তেজনা। ‘‘কত সহজ সরল ভাবে আসল সত্যিটা বলে গেলেন। একেবারে মনে গেঁথে গিয়েছে। আইএসএল চ্যাম্পিয়ন হওয়ার জন্য আমাদের তাতিয়ে দিয়ে গেলেন সচিন।’’
আইএসএল রানার্সদের মন থেকে গত বছরের হতাশা মুছে ফেলতে সচিন শুরুতেই বলেন, ‘‘গত বছর আমরা হয়তো নিজেদের পারফরম্যান্সে সন্তুষ্ট হয়ে পড়েছিলাম। তাই ট্রফি হাতছাড়া হয়ে যায়। কিন্তু এ বার পারফরম্যান্স নিয়ে সন্তুষ্ট হওয়ার কোনও জায়গাই আমাদের নেই। এক দিন ভাল খেললে তার পর দিন আরও ভাল খেলার চেষ্টা করতে হবে। প্রতিদিনই উন্নতি করা চাই। আমাদের পাখির চোখ হবে শুধু চ্যাম্পিয়ন হওয়া।’’ এর পর যোগ করেন, ‘‘ভাল ফল করতে হলে সাধনা চাই। আর পরিস্থিতি যা-ই হোক না কেন, তার সঙ্গে লড়াই করার মানসিক দৃঢ়তাটা যেন কখনও হারিয়ে না যায়।’’ মন্ত্রমুগ্ধের মতোই শুনেছেন শিল্টন পাল, মেহতাব হোসেন, গুরবিন্দর সিংহরা। সচিন তখন যেন পুরো টিমের মেন্টর।
বুধবার কেরল টিমের জার্সির উদ্বোধন করতে তিরুবনন্তপুরম পৌঁছোন কিংবদন্তি ক্রিকেটার। অনুষ্ঠানের আগে টিমের ফুটবলারদের নিজের ঘরে ডেকে নেন মাস্টার ব্লাস্টার। সেখানেই বেশ খানিক্ষণ কাটান ফুটবলারদের সঙ্গে। প্রথম আইএসএলের ফাইনালে পৌঁছানোর পরও শেষ রক্ষা করতে পারেনি সচিনের টিম। আটলেটিকো দে কলকাতার কাছে হেরে রানার্স হয়েই সন্তুষ্ট থাকতে হয়েছিল আইএসএল-ওয়ানে। এ বছর অবশ্য নতুন মিশন। আর সেই মিশনে নামার আগে সচিনের পেপ টক শুনে তেতে গিয়েছেন মহমম্দ রফি, সৌমিক দে-রা। ফুটছে গোটা টিম।
গত বছর শুরুতে কেরল ভাল পারফরম্যান্স করতে পারেনি। সে কথা মনে করিয়ে দিয়ে সচিন প্লেয়ারদের বলেছেন, ‘‘গত বছরের মতো ভুল এ বছর করা চলবে না। শুরু থেকেই ধারাবাহিক ভাবে ভাল পারফরম্যান্স করতে হবে। তবে ম্যাচ ধরে ধরে আমরা এগোব। এবং প্রতি ম্যাচে আগের চেয়ে আরও ভাল পারফরম্যান্স করার চেষ্টা করব।’’
গত বছর কেরল ব্লাস্টার্সেই ছিলেন বাংলার মাঝমাঠের জেনারেল মেহতাব হোসেন। সচিনের সঙ্গে তাঁর আগে থেকেই পরিচয় ছিল। সেই মেহতাবও বলছিলেন, ‘‘সচিনের মতো অমায়িক মানুষ খুব কমই দেখেছি। গত বছর যারা টিমে ছিলাম, তাদের কাউকেই ভোলেনি ও। শুধুমাত্র নতুন যারা টিমে এসেছে, তাদের সঙ্গে নতুন করে পরিচয় করল।’’
এ বারের কেরলের টিমটি অভিজ্ঞতা এবং তারুণ্যের মিশ্রণে বেশ শক্তিশালী। নতুন মার্কি ফুটবলার স্পেনের প্রাক্তন সেন্টার ব্যাক কার্লোস মারচেনা। মাঠে তাঁর প্র্যাকটিস দেখার পর শিল্টন যেমন বলছিলেন, ‘‘আমাদের মার্কি প্লেয়ার কার্লোস কিন্তু এখনও দুরন্ত। অসাধারণ ওর ট্যাকলিং। এই বয়সেও (মারচেনার বয়স ৩৬) যা অনুশীলন করছে!’’
তবে তারকা যে-ই আসুন, কেরলের ইউএসপি নাকি একটাই। সমর্থকদের মতো এ দিন প্রত্যেক ফুটবলারও বলছিলেন, সেই ইউএসপি-র নাম সচিন তেন্ডুলকর।
No comments:
Post a Comment