বৃষ্টি থামায় কিছুটা নিয়ন্ত্রণে বানভাসী চেন্নাইয়ের পরিস্থিতি। চলছে উদ্ধারকার্য। নামতে শুরু করেছে কুয়াম ও অ্যাডেয়ার নদীর জলস্তর। মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র সাহায্যের কথা ঘোষণা করেছে।
বন্যাবিধ্বস্ত চেন্নাইয়ের জন্য ১০০০ কোটি টাকার ত্রাণ প্যাকেজ ঘোষণা করলেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী। বৃহস্পতিবার দুপুরে প্রধানমন্ত্রী হেলিকপ্টারে চেন্নাইয়ের বন্যা পরিস্থিতি পর্যবেক্ষণ করেন। তার পর তামিলনাড়ুর মুখ্যমন্ত্রী জয়ললিতাকে পাশে নিয়েই কেন্দ্রীয় সাহায্যের কথা ঘোষণা করেন। প্রবল বন্যায় দুর্গত শহরে ইতিমধ্যেই মৃতের সংখ্যা ২৬০ ছাড়িয়েছে।
চেন্নাই বিমানবন্দর দেখে চেনার উপায় নেই। রানওয়ে দাঁড়িয়ে থাকা সার সার বিমানের চাকা ডুবিয়ে দিয়ে বইছে জল। ৭০ কিলোমিটার দূরে আরাক্কোনামে নৌবাহিনীর বিমানবন্দরকে অস্থায়ী বিমানঘাঁটি হিসেবে ব্যবহার করা হচ্ছে। প্রধানমন্ত্রীর বিমানও বৃহস্পতিবার আরাক্কোনামেই নামে। তার পর হেলিকপ্টারে চেন্নাই যান মোদী।
বৃহস্পতিবার সকাল থেকে মেঘ সরে সূর্য দেখা দিয়েছে চেন্নাইতে। কিন্তু বিপদ কাটেনি। বেশ কয়েকটি নদীর জলাধার থেকে কর্তৃপক্ষ জল ছাড়তে বাধ্য হওয়ায়, সেই জলও ঢুকছে চেন্নাইতে। ফলে রোদ উঠলেও শহরে জল এখনও বাড়ছে। রেল, আকাশ বা সড়কপথে যোগাযোগ কয়েক দিন আগে থেকেই বিপর্যস্ত। শহরের অধিকাংশ এলাকা ডুবে থাকায় স্কুল-কলেজ-বিশ্ববিদ্যালয়, অফিস-কাছারিও বন্ধ। খাবার এবং পানীয় জলের সঙ্কট আরও তীব্র হয়েছে। এক লিটার দুধের প্যাকেট বিকোচ্ছে ১০০ টাকায়। এক বোতল জল ১৫০ টাকায়। ওষুধের জন্য হাহাকার পড়ে গিয়েচে গোটা শহর জুড়ে। তার মধ্যে নেই বিদ্যুৎ সরবরাহও। বিভিন্ন এলাকায় খুঁটি উপড়ে বিদ্যুৎবাহী তার জলে ডুবে রয়েছে। ফলে যে কোনও মুহূর্তে বড়সড় দুর্ঘটনার আশঙ্কা থেকে যাচ্ছে। উদ্ধারকারীরাও এই বিদ্যুৎবাহী তারের জন্য বিভিন্ন এলাকায় পৌঁছতে পারছেন না। তাই রাজ্য বিদ্যুৎ পর্ষদ অনেক এলাকাতেই বিদ্যুৎ সরবরাহ বন্ধ করে দিয়েছে।
বন্যাজনিত নানা ঘটনায় মৃতের সংখ্যা এখন প্রায় ৩০০-র কাছে। সরকারি সূত্রেই ২৬০ জনের মৃত্যুর খবর স্বীকার করা হয়েছে। পরিস্থিতি এখনও নিয়ন্ত্রণে নয়। সেনাবাহিনী ও জাতীয় বিপর্যয় মোকাবিলা দল ইতিমধ্যেই ৪০০০ দুর্গতকে উদ্ধার করে নিরাপদ স্থানে নিয়ে গিয়েছে। কিন্তু, যোগাযোগ এবং তথ্যের অভাবে বহু মানুষ এখনও জলবন্দি হয়ে রয়েছেন বলে জানা গিয়েছে।
No comments:
Post a Comment